কমরেড মারিয়া মালয়া: বিপ্লবের রক্তময়ী দীপ্তি
নিঃসঙ্গ অরণ্যে ফুটে ওঠা এক দুর্লভ অর্কিডের মতোই ছিলেন তিনি। শ্রান্ত গেরিলা ঘাঁটির গভীর সবুজে যিনি খুঁজে পেতেন প্রাণের রঙ, যিনি চোখ মেলে চেয়ে বলতেন, “মাকালিবাত!” অর্থাৎ “অভিভূতকর!” এই সৌন্দর্য্যবোধই ছিল তাঁর বিপ্লবী সত্তার অন্য রূপ, আর এই অপরূপ হৃদয়ের গভীরে বহমান ছিল শোষিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন। তিনি কমরেড মারিয়া মালয়া।
কমরেড মারিয়া মালয়া ছিলেন ফিলিপাইন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য এবং উত্তর-পূর্ব মিনদানাও অঞ্চলের নির্ভরযোগ্য কাণ্ডারী। পারিবারিক নাম মার্না সুলার্তে। কিন্তু জনযুদ্ধে তাঁর পরিচয় ছাপিয়ে গেছে নামের সীমানা। তিনি হয়ে উঠেছেন ফিলিপিনো বিপ্লবের এক অমর প্রতীক, জনগণের যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা এক রক্তময়ী দীপ্তি।
১৯৭৭ সালে, ফ্যাসিস্ট মার্কোসের শাসনের অন্ধকারে যখন চারপাশে নিরবতা, আতঙ্ক আর নিপীড়ন, তখন তিনি তরুণী কৃষি-প্রযুক্তিবিদ হিসেবে আরাম ও নিশ্চিন্ত জীবনের পথ ত্যাগ করে পা রাখেন মাওবাদী সংগ্রামের পথে। পরিচিত ছিলেন না গ্রামজীবনের কঠোর বাস্তবতার সঙ্গে, কিন্তু হৃদয়ে ছিল শ্রেণিসংগ্রামের জ্বলন্ত শিখা, জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।
তাঁর নেতৃত্বে রচনা হয় এক উজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে ফিলিপিনি লাল ফৌজের প্রতিটি অগ্রযাত্রা ছিল শোষণের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষক ও লুমাদ জাতিসত্তার জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ফল।
তিনি শুধু সংগঠক বা যোদ্ধাই ছিলেন না, ছিলেন আদর্শিক নেতৃত্ব। ১৯৯২ সালের সিপিপি’র দ্বিতীয় পুনর্গঠন আন্দোলনের অন্যতম ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন তিনি, যিনি বিপথগামী দিক থেকে পার্টিকে ফিরিয়ে আনেন বিপ্লবের মূল ধারায়। এমনকি তার সহযোদ্ধা এবং জীবনসঙ্গী কা ওরিসকেও (শহিদ কমরেড কা ওরিস ছিলেন নিউ পিপলস আর্মির মুখপাত্র) তিনি পুনর্গঠন আন্দোলনে উৎসাহিত করেছিলেন।
তিনি ছিলেন জনগণের কণ্ঠস্বর, তাদের স্বপ্নের ভাষ্যকার। প্রতিটি আন্দোলনে, প্রতিটি লড়াইয়ে তঁার উপস্থিতি ছিল তরুণ বিপ্লবীদের প্রেরণার বাতিঘর। দীর্ঘ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন সায়াহ্নে এসেও তিনি পিছু হটেননি। ১২ ফেব্রুয়ারি’২৫, শত্রু বাহিনীর গুলিতে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। কিন্তু মৃত্যু তাঁকে থামাতে পারেনি, কারণ বিপ্লবীরা মরে না, তাঁরা ইতিহাস হয়ে ওঠেন।
শহিদ কমরেড মারিয়া মালয়া– লাল সালাম!
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কমরেড মারিয়া মালয়া: বিপ্লবের রক্তময়ী দীপ্তি
নিঃসঙ্গ অরণ্যে ফুটে ওঠা এক দুর্লভ অর্কিডের মতোই ছিলেন তিনি। শ্রান্ত গেরিলা ঘাঁটির গভীর সবুজে যিনি খুঁজে পেতেন প্রাণের রঙ, যিনি চোখ মেলে চেয়ে বলতেন, “মাকালিবাত!” অর্থাৎ “অভিভূতকর!” এই সৌন্দর্য্যবোধই ছিল তাঁর বিপ্লবী সত্তার অন্য রূপ, আর এই অপরূপ হৃদয়ের গভীরে বহমান ছিল শোষিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন। তিনি কমরেড মারিয়া মালয়া।
কমরেড মারিয়া মালয়া ছিলেন ফিলিপাইন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য এবং উত্তর-পূর্ব মিনদানাও অঞ্চলের নির্ভরযোগ্য কাণ্ডারী। পারিবারিক নাম মার্না সুলার্তে। কিন্তু জনযুদ্ধে তাঁর পরিচয় ছাপিয়ে গেছে নামের সীমানা। তিনি হয়ে উঠেছেন ফিলিপিনো বিপ্লবের এক অমর প্রতীক, জনগণের যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা এক রক্তময়ী দীপ্তি।
১৯৭৭ সালে, ফ্যাসিস্ট মার্কোসের শাসনের অন্ধকারে যখন চারপাশে নিরবতা, আতঙ্ক আর নিপীড়ন, তখন তিনি তরুণী কৃষি-প্রযুক্তিবিদ হিসেবে আরাম ও নিশ্চিন্ত জীবনের পথ ত্যাগ করে পা রাখেন মাওবাদী সংগ্রামের পথে। পরিচিত ছিলেন না গ্রামজীবনের কঠোর বাস্তবতার সঙ্গে, কিন্তু হৃদয়ে ছিল শ্রেণিসংগ্রামের জ্বলন্ত শিখা, জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।
তাঁর নেতৃত্বে রচনা হয় এক উজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে ফিলিপিনি লাল ফৌজের প্রতিটি অগ্রযাত্রা ছিল শোষণের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষক ও লুমাদ জাতিসত্তার জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ফল।
তিনি শুধু সংগঠক বা যোদ্ধাই ছিলেন না, ছিলেন আদর্শিক নেতৃত্ব। ১৯৯২ সালের সিপিপি’র দ্বিতীয় পুনর্গঠন আন্দোলনের অন্যতম ভিত্তিপ্রস্তর করেছিলেন তিনি, যিনি বিপথগামী দিক থেকে পার্টিকে ফিরিয়ে আনেন বিপ্লবের মূল ধারায়। এমনকি তার সহযোদ্ধা এবং জীবনসঙ্গী কা ওরিসকেও (শহিদ কমরেড কা ওরিস ছিলেন নিউ পিপলস আর্মির মুখপাত্র) তিনি পুনর্গঠন আন্দোলনে উৎসাহিত করেছিলেন।
তিনি ছিলেন জনগণের কণ্ঠস্বর, তাদের স্বপ্নের ভাষ্যকার। প্রতিটি আন্দোলনে, প্রতিটি লড়াইয়ে তঁার উপস্থিতি ছিল তরুণ বিপ্লবীদের প্রেরণার বাতিঘর। দীর্ঘ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন সায়াহ্নে এসেও তিনি পিছু হটেননি। ১২ ফেব্রুয়ারি’২৫, শত্রু বাহিনীর গুলিতে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। কিন্তু মৃত্যু তাঁকে থামাতে পারেনি, কারণ বিপ্লবীরা মরে না, তাঁরা ইতিহাস হয়ে ওঠেন।
শহিদ কমরেড মারিয়া মালয়া– লাল সালাম!
আরও খবর
- শনি
 - রোব
 - সোম
 - মঙ্গল
 - বুধ
 - বৃহ
 - শুক্র
 
